ফখর উদ্দিন ইমরান:
জীবনের পরন্ত সময়ে এসেও বেঁচে থাকার অদম্য চেষ্টা চালাচ্ছে মানুষ। দুই পা অচল তবুও মানুষের কাছে হাত না পেতে অদম্য মনোবল ও মানসিক শক্তি দিয়ে বেঁচে থাকার শেষ চেষ্টাটুকু করে যাচ্ছে কটিয়াদীর খুরশিদ মাঝি। নদীর পানি আর শেষ সম্বল একটি নৌকাই যেনো তার শেষ ভরসা৷ ৩০ বছর ধরে খেয়া পারাপার করে চলছেন তিনি৷
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের চরপুক্ষিয়া মৃধা বাড়ি এলাকার মাঝি খুরশিদ৷ বাড়ির পাশের নদীতে খেয়া পারাপার করে যা উপার্জন করেন তাই দিয়ে খুঁড়িয়ে চলছে তার জীবন৷
খুরশিদ মাঝিকে নতুন দোকান ও মালামাল দিয়ে সহায়তা করার উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন৷ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
মাঝি ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে যানবাহন চলাচলের উন্নতি হওয়াতে গুরুত্ব কমেছে নদী পথের৷ তবুও নদীতেই কাটছে তার দিন৷ নদীর অপর প্রান্তে নরসিংদীর মনোহরদীর চরমান্দালিয়া ইউনিয়ন। প্রতিদিন কিছু মানুষ এখনো প্রয়োজনীয় কাজে নদী পারাপার হয়৷ নিজ উপার্জন বেঁচে থাকার প্রয়াস খুরশিদ মাঝির ৷ স্বামী-স্ত্রী মিলে কোনরকমে কাটছে একাকিত্ব দিনগুলো৷ প্রশাসনের সহায়তার উদ্যোগের সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। খুরশিদ মাঝির দুই পা অচল থাকায় দড়ি টানা নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার করেন৷ অধিকাংশ সময় যাত্রীরাই দড়ি টেনে নদী পার হন৷ এভাবেই প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত চলছে খুরশিদ মাঝির দিনগুলো৷ এ নিয়ে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হবার পরে কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছুটে যান নদীর ঘাটে৷ এসময় তিনি মাঝির সুখ দুঃখের কথাগুলো শুনেন৷ এবং তাকে সংসার নিয়ে চলার জন্য একটি দোকান ও প্রয়োজনীয় মালামাল তুলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন৷
খুরশিদ মাঝি বলেন, ‘কেউ আমারে সহায়তা করবো এইডা কহনো চিন্তা করি নাই৷ আমি সরকারের এই সহায়তার কথা শুইন্যা দীর্ঘ অনেক বছর পরে মনডা খুশি অইলো ৷ এই দোকানের মাধ্যমে আমার সংসারে একটু হলেও ভালো অইবো’।
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম বলেন, খুরশিদ মাঝির জীবন যুদ্ধ নিয়ে একটি সংবাদ আমার নজরে আসে৷ আজ আমি এসে খোঁজখবর নিলাম৷ খুরশিদ মাঝির সাথে কথা বলে তাকে ঘাটের সাথে একটি দোকান তৈরি করে মালামাল সহ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি৷ এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও উপকৃত হতে পারেন।
https://slotbet.online/